Saturday, June 27, 2015

ডায়াবেটিসের সতর্কতা

                                              প্রি- ডায়াবেটিস                                                                                                                                                                                    






          প্রি-ডায়াবেটিস। রক্তের সুগার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তবে ডায়াবেটিস হবার মত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এরকম থাকলে দশ বছরের মধ্যে পুরোপুরি ডায়াবেটিস হয়ে যায়। শরীরের ওজন বেশি থাকলে কমিয়ে, কম খেয়ে, বেশি ব্যায়াম করে ঝুঁকি কমাবার  চেষ্টা করেন। এমন কিছু সুঅভ্যাসও আছে যা চর্চা করলে প্রি-ডায়াবেটিস ঠেকানো যায়। খন্ডানো যায় বড় সমস্যা, জীবনভর ওষুধ ও রক্ত সুগার তদাকরির হাত থেকে বাঁচা যায়। হূদরোগ, আলঝাইমার রোগ, অন্যান্য বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকেও বাঁচা যায়। খাদ্য, ভিটামিন খান, গুল্ম, এমনকি মনের দৃষ্টিভঙ্গী একে প্রতিহত করার জন্য কম বড় হাতিয়ার নয়।
 মাত্র ১০ পাউন্ড বাড়তি ওজন ঝরালেও অনেক কমে ঝুঁকি। কম ক্যালোরি খেয়ে ঘটানো যায় এমন ম্যাজিক।

সঠিক ক্ষুধা বর্ধক চাই

শর্করা খাওয়ার আগে পেট ভরে সবুজ শাক সবজি ও স্যালাড খেলে রক্তের সুগার থাকবে  নিয়ন্ত্রনে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগী বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স সমস্যা যাদের তাদের দেখা গেছে প্রচুর শ্বেতসার আহারের পূর্বে ২ টেবিল চামচ ভিনোগার খেয়ে নিলে রক্তের সুগার কমে আসে। ভিনেগারে রয়েছে এসেটিক এসিড, যা শ্বেতসার পরিপাক করার এনযাইমদের নিষ্ক্রিয় করে ধীরে করে দেয় শ্বেতসার পরিপাক। সালাদের সাথে ভিনেগার  মিশিয়ে খেতে পারেন ।

যত পারুন হাটুন
গবেষণায় দেখা গেছে যে সব লোক  ব্যায়াম করেছেন দিনে ৩৫ মিনিট- তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমেছে ৮০%, ওজন না কমানো সত্বেও কেবল হেটে দেহকোষের ইনসুলিন রিসেপটারের সংখ্যা বাড়ে। এতে শরীরে হরমোন ইনসুলিন আরো কার্যকরভাবে  ব্যবহার করতে পারে। ইনসুলিন রক্তের সুগারকে কোষের ভেতর ঢুকতেসাহায্য করে, শরীর গ্লুকোজ দহন করে পায় শক্তি ও পুষ্টি। তাই যানবাহনে
কম চলুন,  বেশি হাঁটুন।                                                                         
সঠিক শস্যদানা গ্রহন করুন

সঠিক শস্যখাদ্য বেছে নিলে স্লিম থাকা সহজ। নিয়ন্ত্রণেও থাকে রক্তের সুগার। গোটাদানাশস্য বেশি খেলে স্তন ক্যান্সারের হার কমে, কমে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের। উচ্চ আঁশ শস্য ভালো। যেমন যব, ভুট্টা বেশ ভালো।

কফি পান ভালো

হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ গবেষণায় দেখা গেছে ৩-৪ কাপ  কফি দিনে কমে ২৯-৫৪% ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। ক্যাফিনে কাজ হয়। চা ও চকোলেটও। ক্যাফিন উজ্জীবিত করে বিপাক। ক্যাফিনের বড় উত্স কফিতে আছে আরও পটাসিয়াম, ম্যাগনোসিয়াম ও এন্টি-অক্সিডেন্ট, গ্লুকোজ শোষণে সহায়ক।



নিয়মিত খাবেন শাক সবজি

মুরগী, খাসীর গোস্ত খেতেই যদি হয় তাহলে কালে ভদ্রে। কদাচিত্। কোনও উত্সবে। বরং নিয়মিত খান রঙ্গিন শাক সবজি ও মাছ।

মসলাযুক্ত খাবার খান

দারুচিনি বেশ প্রভাব ফেলে রক্তের সুগারের উপর। জার্মান গবেষকরা দেখেছেন এক গ্রাম দারুচিনি পাউডারের একটি ক্যাপসুল খেলে রক্তের সুগার কমে ১০%। দারুচিনিতে এমন উপকরণ আছে যা ইনসুলিন রিসেপটারকে উদ্দীপত্ত করে এমন এনযাইমদের সক্রিয় করে। মিষ্টি এই মসলা রক্তের কোলেস্টেরল ও চর্বিও কমিয়ে থাকে।

শিথিল হোন প্রতি দিন
সামান্য শিথিললায়ন ব্যায়াম ও অন্যান্য স্ট্রেস মোকাবেলার কৌশল রক্ত সুগারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। যেমন- দিন শুরু হোক যোগ ব্যায়াম, ধ্যান দিয়ে, হাঁটা দিয়ে। ফোনে উত্তর দেয়ার আগে তিনটি গভীর, ধীর
শ্বাস  নিন। গাড়ি স্টার্ট দেয়ার আগে, বাচ্চাদের  লাঞ্চ দেবার আগে, কোন কাজ শুরুর আগে।                                                                                                             


রাতে যেন হয় সুনিদ্রা
খুব কম ঘুমালে বা খুব বেশি ঘুমালে (স্লিপ এপ্লিয়ার জন্য) স্নায়ুতন্ত্র থাকে বড় সজাগ, এতে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রক হরমোন ব্যহত হয়। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যাদের ঘুম ৫ ঘন্টার কম এদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি হয় দ্বিগুণ। সুনিদ্রার জন্য বিকেল থেকে চা-কফি, চকলেট গ্রহণ করা উচিত নয়। অফিসে কাজ রেখে আসবেন, ঘরে কাজ নিয়ে আসবেন না। লেটনাইট টিভি দেখবেন না। মোবাইল অফ রেখে ঘুমাবেন।

সঙ্গীর সাথে থাকুন, থাকুন
নি:সঙ্গ থাকেন যে সব মহিলা, এদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আড়াই গুণ বেশি পরিবার পরিজন নিয়ে থাকা মহিলাদের তুলনায়। গবেষকরা এমনই অভিমত: প্রকাশ করেছেন। পুরুষদের ক্ষেত্রেও তা সমভাবে প্রযোজ্য। তাই সত্সঙ্গে থাকুন সব সময়।


প্রি-ডায়াবেটিস যদি রক্তের সুগার

১০০-১২৫ এর মধ্যে থাকে। ১০ বছরে হতে পারে পূর্ণ ডায়াবেটিস। পথ্য জীবন ধারার পরিবর্তন, ওজন কমানো, লাইফস্টাইল পরিবর্তনসহ নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে থাকতে হবে।






গর্ভবতী মা


                                       গর্ভবতী মায়ের পরিচর্যা





                 একজন মহিলা যখন প্রখম বারের জন্য গর্ভধারন করেন তার কাছে অনেক কিছুই অজানা থাকে,  এজন্য গর্ভধারনের পরপরই একজন স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হওয়া উচিত। এতে যে শুধু মা সুস্থ্য থাকবে তা নয়, গর্ভের শিশুটির নিরাপত্তাও এর সাথে জড়িত।মায়ের যত্ন কখনই তার নিজের একার পক্ষে করা সম্ভব না কারণ গর্ভ ধারণের পর অনেক মায়ের অবস্থাই নাজুক হয়ে যায় আপনার কাছের মানুষটিকে মানসিক, নৈতিক সহায়তা করতে জেনে নিন কিছু প্রয়োজনীয় তথ্যসঠিক সময়ে নিয়মিত ভাবে চেক-আপ না করালে মা শিশু উভয়ের শারীরিক ক্ষতি হতে পারে এমনকি বাচ্চা নষ্ট হয়ে যেতে পারে   
গর্ভাবস্থায়  নিয়মিত এই পরীক্ষা করতে হবে দেখার জন্য যে বাচ্চা বা মায়ের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা

০১. ১৬ সপ্তাহের মধ্যেরক্তশূন্যতা, সিফিলিস, প্রসব জনিত কোন জটিলতা আছে কিনা জন্ম পরিকল্পনা স্বাস্থ্য শিক্ষাও নিতে হবে

০২. ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে- বাচ্চা ঠিক মত বাড়ছে কিনা, পেটের বেড়ে যাওয়া অংশ মেপে পরীক্ষা করাতে হবে

০৩. ৩২ তম সপ্তাহে- এক্লামশিয়া ( উচ্চ রক্ত চাপ, প্রস্রাবে প্রোটিন যাওয়া, হাত পা ফুলে যাওয়া আছে কিনা ),

০৪. ৩৬ তম সপ্তাহে -বাচ্চার পজিশন, জরায়ুতে কীভাবে আছে, মাথা নাকি পা বা শরীরের অন্য অংশ নীচের দিকে তা জানতে হবেজন্ম পরিকল্পনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে

খাদ্যঃ  গর্ভাবস্থায়  প্রতিদিন ৩ বেলা খাবারের সাথে নিয়মিত  কমপক্ষে এক মুঠ বেশি খাবার খেতে হবেরান্নায় যথেষ্ট পরিমান তেল ব্যবহার করতে হবে  মাকে এ সময় পুষ্টিকর, সহজপাচ্য  ও অধিক   
আমিষ বা প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে খাদ্য তালিকায় শাক-সব্জি এমন পরিমানে যেনো রাখা হয় যাতে ভিটামিন এর অভাব না হয়।  আয়োডিন যুক্ত লবন খেতে হবে

বিশ্রাম ও ঘুমঃ একজন গর্ভবতী মাকে একটি সুস্থ্য সন্তান জন্ম দেবার জন্য কিছুটা বাড়তি বিশ্রাম ও ঘুমানোর প্রয়োজন রয়েছে। দিনে ২ ঘন্টা ঘুম সহ দৈনিক নুন্যতম ১০ ঘন্টা ঘুমানো মায়ের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

স্তনঃ এসময় স্তন সামান্য বড় হতে পারে, স্তনের বোটায় ও কিছু পরিবর্তন আসে, স্তন সামান্য টনটন করাটাও স্বাভাবিক। এসব কারন মাথায় রেখে স্তনের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।

যৌন মিলনঃ গর্ভের প্রথম তিন মাসে যৌন মিলন না করাই উত্তম। গর্ভের শেষ ৬ সপ্তাহ ও যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে এ নিয়ে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বিশেষ ভাবে মিলন করা যেতে পারে।

ভ্রমনঃ সম্ভব হলে গর্ভের প্রথম তিন মাস যে কোনো ধরনের লম্বা ভ্রমন এড়িয়ে চলা উচিত।

টিকা :গর্ভের শুরুতেই টিটেনাস এর টিকা নিয়ে নিতে হবে। এই টিকা নেয়ার কারনেসন্তানের কোনো ক্ষতি হবার সম্ভাবনা নেই বরং না নিলে প্রসবের সময় ঝুকির সম্ভাবনা থেকে যায়।


গোসল ও পোশাকঃ দৈনিক গোসল করার অভ্যাস করতে হবে। ঢিলে ঢালা আরাম দায়ক পোশাক পরিধান করার জন্য সব চিকিৎসকই মাদের উপদেশ দিয়ে থাকেন।

বিবিধ :পায়ে পানি আসা, উচ্চ রক্তচাপ, প্রসাব কমে যাওয়া, পেটের উপর দিকে ব্যথা , মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই সাথে সাথে আপনার চিকিৎসক কে জানাবেন।
ভারী কাজ  টিউবওয়েল চাপা, ধান ভানা, ভারী জিনিষ তোলা, অতিরিক্ত/ভারী কাপড় ধোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কষ্টকর পরিশ্রম বর্জন করতে হবে
প্রাপ্ত বয়ষ্ক মহিলার অপুষ্টিতে ভোগার পরিণতি:  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় , কর্মক্ষমতা কমে যায়,  
শারীরিক গঠন ছোট হওয়ার কারণে সন্তান প্রসবে জটিলতা ও বিপদ দেখা দেয়, প্রসবকালীন ও  প্রসব-
পরবর্তী  জটিলতা এবং রক্তক্ষরণের ফলে মায়ের মৃত্যু ঝুঁকি এবং নবজাতকের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়  

Friday, June 26, 2015

প্রথম ঋতু

                                        ঋতুস্রাব



            প্রথম ঋতু কখন হবে তা কিশোরীরা বুঝতে পারে না। কারন আমাদের দেশের কিশোরীদের ঋতু সম্পর্কে কোনো ধারনাই থাকে না। কেউ কেউ ভয় পায়, কেউ ভয়ে মা বা বাড়ির বড় কাউকে জানায় না। এ অবস্থায় মানসিকভাবে সে বিভিন্ন জটিলতার মুখে পড়ে। সচেতনভাবেই বাড়ির বড়দের বিষয়টি দেখা উচিত্‍ ।
ঋতু শুরু হওয়ার আগে কিছু কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় । সেগুলো একটু খেয়াল করলেই কিশোরী নারী হওয়ার সময়টি সহজ হয়ে যায়। সাধারনত ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যেই কিশোরী শরীর ও মনে নারী হয়ে উঠে। আর শরীরের দিক দিয়ে উঠার বিষয়টিই হলো ঋতুস্রাব । জেনে নেয়া যাক কিশোরীর প্রথম ঋতুস্রাবের আগে কী কী লক্ষণ পকাশ পায় ।

       স্তনের বোটা ফুলে উঠা এবং স্পর্শে ব্যথা লাগা , মাথা ব্যথা , মাথা ঘোরা , অবসাদ , খাবারের প্রতি তীব্র আগ্রহ , গ্যাস হওয়া বা ঢেকুর তোলা এবং ওজন বৃদ্ধি ,মুখে ব্রুণ হওয়া , মেজাজের পরিবর্তন,  বিরক্তিভাব বেডে যাওয়া , অস্তিরতা বিষাদ গ্রস্ততা এবং ডায়রিয়া কিংবা কোষ্ঠকাঠিণ্য আর এসব লক্ষণ প্রকাশের আগেই কিশোরীকে ঋতু সম্পর্কে ধারণা দেওয়া বাড়ির মা বোন বা ভাবিদের কর্তব্য

      অনেকে মাসিকের সময় কষ্ট পায় । ডিসমেনোরিয়া হলো ঋতুকালীন কষ্ট। মাসিক শুরু হয়ার আগে থেকে বা মাসিকের শুরুতে অথবা মাসিক চলাকালীন তল পেটের ভীষণ ব্যথা যন্ত্রণাই হল ডিসমেনোরিয়া । এর কারন ইস্ট্রোজেন প্রজেস্টেরন হরমোনের মধ্যে সঠিক ভারসাম্যের অভাব, প্রজেস্টেরন হরমোন বেড়ে গেলে, কোন কারনে জরায়ুর মধ্যে স্রাবের রক্ত জমাট বেধে গেলে  এবং রক্তস্বল্পতা। এই সময় গরম পানি দিয়ে গোসল , পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ,দুশ্চিন্তা মুক্ত  জীবনযাপন করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের  পরামর্শ নিন।